লামা ও আলীকদম উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়, ক্ষতিগ্রস্থ কয়েকশ বাড়ী

প্রকাশঃ ০৪ মে, ২০২৪ ০৫:৪৮:৫৩ | আপডেটঃ ০৬ অক্টোবর, ২০২৪ ০২:২৫:১১
সিএইচটি টুডে ডট কম, বান্দরবান। বান্দরবানের লামা ও আলীকদম উপজেলায় আঘাত হেনেচে কালবৈশাখী ঝড়। বৃহস্পতিবার (২ মে) মধ্য রাতে হঠাৎ লামা ও আলীকদম উপজেলার  বিভিন্ন ইউনিয়নে কালবৈশাখী ঝড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েকশ বসতঘর। ভেঙে গেছে বিভিন্নস্থানে বিদ্যুতের খুটি। এছাড়া ফসলি জমি ও ফলের বাগান ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে অনেক কৃষকের।

এদিকে লামা উপজেলায় বিদ্যুৎ ও যোগাযোগ ব্যবস্থা সচল হলেও কালবৈশাখী ঝড়ের আলীকদম উপজেলায় এখনো বিদ্যুৎ সঞ্চালন স্বাভাবিক হয়নি, ক্ষতিগ্রস্তদের মধ্যে অধিকাংশ খোলা ছাদের নিছে বসবাস করছেন।

লামা বিদ্যুৎ বিভাগের আবাসিক প্রকৌশলী মো সাজ্জাদ সিদ্দিক জানান, ১মে ভোরে ঝড়ে বাতাসে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ১১কেভি সঞ্চালনের ১৭টি খুটি ও ৩৩কেভি সঞ্চালনের ১টি খুটি ভেঙে যাওয়াতে বিদ্যুৎ সঞ্চালনের স্বাভাবিক কার্যক্রম ব্যাহত হয়েছে।

শুক্রবার (২মে) সকালে মেইন লাইন চালু করে লামা হাসপাতাল ও শহর এলাকায়  বিদ্যুৎ সংযোগ পুনঃস্থাপন করা হয়েছে। সবচেয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে লাইনঝিড়ি হতে ছাগলখাইয়া, লামা আলীকদম সঞ্চালনের ১১ কেভি লাইনটি প্রায় দেড় কিলোমিটার বিদ্যুৎতের তার ছিড়ে যাওয়াতে আলীকদমে সংযোগ স্থাপন করা যায়নি। বিদ্যুৎ বিভাগের কর্মকর্তা-কর্মচারী একযোগে দিনরাত কাজ করে যাচ্ছেন বিদ্যুৎতের লাইন স্বাভাবিক করতে। দুয়েকদিনের মধ্য লামা ও আলিকদমের বিদ্যুৎ সরবরাহ স্বাভাবিক হবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

লামা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মনিরুল ইসলাম জানান, ১মে ও ২মে প্রচুর ঝড়ো হাওয়া তার সাথে বৃষ্টির কারণে লামা উপজেলায় ২০৫ টি ঘর সম্পূর্ণ, ৬১০টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এই ঘটনায় ২জন আহত হয়ে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স থেকে প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে বর্তমানে বাড়ীতে রয়েছেন। তিনি আরো বলেন, সড়কে গাছপালা ভেঙে পড়েছিল সেগুলো পৌরসভার মেয়রের নেতৃত্বে, রেড ক্রিসেন্টের সদস্য স্থানীয়রা সহ বিভিন্ন জনসাধারণ মিলে পরিস্কার করেছে ।

লামা উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) মো. মনিরুল ইসলাম আরো জানান, জেলা প্রশাসন থেকে শুক্রবার (৩ মে) দশ মেট্রিকটন খাদ্যশস্য বরাদ্ধ দেওয়া হয়েছে। গুদামে কিছু ঢেউটিন ছিল সেগুলো ক্ষতিগ্রস্তদের মাঝে বিতরণ করা হয়েছে। ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণ করে ত্রাণ মন্ত্রণালয়ে প্রেরণ করা হবে বলে জানান তিনি। এছাড়া সর্বমোট ক্ষয়ক্ষতি প্রায় ৫কোটি টাকারও বেশি হতে পারে বলে ধারণা করছেন তিনি।

লামা পৌর মেয়র মো.জহিরুল ইসলাম জানান, ঘুর্ণিঝড়ে লামা উপজেলায় ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে, পৌর এলাকায় সবচেয়ে বেশী ক্ষতি হয়েছে। ক্ষতিগ্রস্থদের সহায়তার জন্য ত্রাণ ও পূর্ণবাসন মন্ত্রণালয় থেকে তাৎক্ষনিক চাউল ও আর্থিক বরাদ্ধ পাওয়া গেছে, তার সাথে জেলা ও উপজেলা প্রশাসন থেকেও বরাদ্ধ পাওয়া গেছে, সেগুলো সমন্বয় করে ক্ষতিগ্রস্থদের মধ্যে বিতরন করা হচ্ছে ।
এদিকে ক্ষতিগ্রস্থ এলাকা পরিদর্শন করতে বান্দরবান জেলা সদর থেকে লামা উপজেলা গিয়েছেন বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন। শুক্রবার (৩ মে) বিকেল সাড়ে ৫টায় লামা পৌরসভার লাইনঝিরি এলাকায়  প্রশাসনের পক্ষ থেকে লামা উপজেলায় কালবৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থ পরিবারের মাঝে চাল ও ঢেউটিন বিতরণ করা হয়। বান্দরবানের জেলা প্রশাসক শাহ মোজাহিদ উদ্দিন, পুলিশ সুপার সৈকত শাহীন ও লামা উপজেলা নির্বাহী অফিসার কামরুল হোসেন চৌধুরীসহ প্রশাসনের উর্ধতন কর্মকর্তা এবং ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিরা এসময় উপস্থিত ছিলেন।

সর্বসত্ত্ব সংরক্ষিত, ২০১৭-২০১৮।    Design & developed by: Ribeng IT Solutions